কয়লা ‘হরিলুট’, সাবেক এমডিকে জিজ্ঞাসবাদ

0
307

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট: দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লা খনিতে `হরিলুটের’ঘটনায় বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি লিমিটেডের (বিসিএমসিএল) সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি)এস এম নুরুল আওরঙ্গজেবকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

নুরুল আওরঙ্গজেব বর্তমানে মধ্যপাড়া গ্রানাইট মাইনিং কোম্পানির এমডি হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। জালিয়াতির মাধ্যমে ১ লাখ ১৬ হাজার মেট্রিক টন কয়লা খোলাবাজারে বিক্রি করে প্রায় ২০০ কোটি টাকা আত্মসাতের দায়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে দুদক।

বুধবার (১ আগস্ট) সকাল সাড়ে ৯টা থেকে দুদকের প্রধান কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন তদন্ত কর্মকর্তা ও দুদক উপপরিচালক মো. শামসুল আলম।

দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রনব কুমার ভট্টাচার্য্য বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে এ ঘটনায় গত ২৭ জুলাই রাত ১২টায় বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির ব্যবস্থাপক (প্রশাসন) মোহাম্মদ আনিছুর রহমান বাদী হয়ে মামলা করেন। মামলায় ১৯ জন আসামির বিরেুদ্ধে খনির ১ লাখ ৪৫ হাজার টন কয়লা গায়েবের অভিযোগ আনা হয়। যা পরবর্তীতে দুদক তদন্ত শুরু করে।

এরই ধারাবাহিকতায় মামলার ১৯ আসামিসহ পেট্রোবাংলার ২১ জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞায় চিঠি দেয় দুদক। ১৯ আসামিসহ নিষেধাজ্ঞাপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা হলেন-মহাব্যবস্থাপক (মাইন অপারেশন) আবু তাহের মো. নুরুজ্জামাম চৌধুরী; উপ-মহাব্যবস্থাপক খালেদুল ইসলাম; ব্যবস্থাপনা পরিচালক হাবিব উদ্দিন আহমদ; মহাব্যবস্থাপক (জেনারেল সার্ভিস) মাসুদুর রহমান হাওলাদার; ব্যবস্থাপক (প্রোডাকশন ম্যানেজমেন্ট) অশোক কুমার হাওলাদার; ব্যবস্থাপক (মেইনটেনেন্স এন্ড অপারেশন) আরিফুর রহমান; ব্যবস্থাপক (ডিজাইন, কন্সট্রাকশন এন্ড মেইনটেনেন্স) জাহিদুল ইসলাম; উপ-ব্যবস্থাপক (সেফটি ম্যানেজমেন্ট) আকরামুল হক; উপ-ব্যবস্থাপক (কোল হ্যান্ডলিং এন্ড ম্যানেজমেন্ট) খলিলুর রহমান; উপ-ব্যবস্থাপক (মেইনটেনেন্স এন্ড অপারেশন) মোরশেদুজ্জামান; উপ-ব্যবস্থাপক (প্রোডাকশন ম্যানেজমেন্ট) হাবিবুর রহমান; উপ-ব্যবস্থাপক (মাইন ডেভেলপমেন্ট) জাহিদুর রহমান; উপ-ব্যবস্থাপক (ভেন্টিলেশন ম্যানেজমেন্ট) সত্যেন নাথ বর্মণ; ব্যবস্থাপক (নিরাপত্তা) সৈয়দ ইমাম হাসান; উপ-মহাব্যবস্থাপক (মাইন প্ল্যানিং অপারেশন) জোবায়ের আলী; সাবেক মহাব্যবস্থাপক (ফাইন্যান্স) আব্দুল মান্নান পাটোয়ারি ও গোপাল চন্দ্র সাহা; সাবেক মহাব্যবস্থাপক (এক্সপ্লোরেশন), কোম্পানি সেক্রেটারি আবুল কাশেম প্রধানিয়া ও মোশারফ হোসেন। আসামির বাইরে কোল মাইনিং কোম্পানির সাবেক এমডি কামরুজ্জামান ও আমিনুজ্জামানের বিরুদ্ধে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়।

গত ২৭ জুলাই রাত ১২টায় বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির ব্যবস্থাপক (প্রশাসন) মোহাম্মদ আনিছুর রহমান বাদী হয়ে মামলা করেন। যা পরবর্তীতে দুদক তদন্ত শুরু করে।

এদিকে দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লা খনিতে `হরিলুটের’ঘটনায় তদন্তে নেমেছে দুদক। দুর্নীতির অনুসন্ধানের জন্য তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে সংস্থাটি।

দুদকের উপ পরিচালক শামসুল আলমের নেতৃত্বে গঠিত এই কমিটিতে সদস্য হিসেবে আছেন সহকারী পরিচালক এএসএম সাজ্জাদ হোসেন ও উপ সহকারী পরিচালক এএসএম তাজুল ইসলাম। আর দুদক পরিচালক কাজী শফিকুল আলমকে এই অনুসন্ধান কাজের তদারকি করার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।

দুদক আইন অনুযায়ী ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে অনুসন্ধান শেষ করে কমিটিকে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

কয়লা উধাওয়ের ঘটনায় খনির শীর্ষ চার কর্মকর্তাকে শাস্তি দেয়া হয়েছে। ঘটনা তদন্তে পেট্রোবাংলার একজন কর্মকর্তাকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।

কয়লা সরবরাহ না হওয়ায় বড়পুকুরিয়া কয়লাভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন গত সপ্তাহ থেকে বন্ধ হয়ে গেছে।

৫২৫ মেগাওয়াট ক্ষমতার ওই কেন্দ্রে উৎপাদন বন্ধ থাকায় রংপুর বিভাগের আট জেলা বিদুৎ সঙ্কেটে পড়ায় বিকল্প পথ খুঁজছে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড। তবে সরকারের পক্ষ থেকে আশা করা হচ্ছে, শিগগির এ সংকট মোকাবিলা করা হবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here