সৈয়দ কামরুল ইসলাম: সেক্রেটারিয়েটে আমার ডজন খানেক বন্ধু ছিল। তাদের কেউ কেউ নরমাল কোর্সে রিটায়ার্ড করেছে। কাউকে প্রিম্যাচ্যুওরড ডেলিভারির মতো জয়েন্ট সেক্রেটারির চেয়ার ছেড়ে দিতে হয়েছে। আমার কখনো ইচ্ছে হয়নি তাদের সঙ্গে দেখা করার বা তাদের কাউকে কোনো কারনে রেফারেন্স দেয়ার। আমি কোনদিন তাদের দপ্তরে এক মিনিটের জন্যও যাইনি।
একদিন খুলনা জিভিশনাল কমিশনারের বিল্ডিং এ গিয়েছিলাম ৫০০ বেড হসপিটালের বিল্ডিং-বি এর পক্ষে চীফ ইন্জিনিয়ারের সংগে দেখা করার জন্য। হঠাৎ সেখানে দেখা হলো আমার বিএল কলেজের ক্লাস ফ্রেন্ড মমতাজ আহমেদ বেবীর সংগে। জিজ্ঞেস করলাম কেমন আছো? বেবী চোখ বাঁকা করে তীর্যক তাকিয়ে জানতে চাইলো আমি কে। বিব্রত আমি বললাম, আমি কামরুল, তোমার সংগে বিএল কলেজে section-A তে দু’বছর পড়েছিলাম। আমিই তখন একমাত্র স্টুডেন্ট ছিলাম যে যশোর বোর্ডে 6th stand করেছিল। তুমি আমাকে তোমাদের মহেশ্বরপাশার বাড়িতে কয়েকবার নিয়ে গিয়েছিলে। তুমি আমাকে চিনতে পারছো না?
আমি একটু ব্যস্ত, যেতে হবে, বলেই চলে গেল।
আরেকটি ঘটনা। সকাল বেলায় ধানমন্ডিতে হাঁটতাম। সেখানে এক সকালে দেখা হয়েছিল বিএল কলেজের ক্লাস ফ্রেন্ড শফিকুল ভূইয়াঁর সংগে। সে বললো, সে তখন assistant secretary হয়েছে। সেক্রেটারিয়েটে আছে। ভাবছিলাম HSC তে থার্ড ডিভিশনে পাশ করে কিভাবে BCS হলো! একদিন কল করলাম শফিকুলকে। ফোন ধরে জানতে চাইল আমি কে। বললাম, আমি কামরুল, সৈয়দ কামরুল ইসলাম। বিএল কলেজে ৭৩ এর ব্যাচ। চিনতে পারলো না। বললাম, সে বছর বিএল কলেজে আমিই একমাত্র যশোর বোর্ডে স্ট্যান্ড করা স্টুডেন্ট ছিলাম। মনে পড়ে?
তোমার সংগে দেখা হয়েছিল ধানমন্ডি মাঠে কিছুদিন আগে। চিত্র পরিচালক দিলিপ বিশ্বাস আমার সংগে ছিল। তুমি এসে আমার কুশল জানতে চাইলে। বললে, মৎস ও পশুপালন মন্ত্রনালয়ে আছো। সে চিনতে পারলো না। তখন আমিই জানতে চাইলাম, তুমি কি বিএল কলেজে ৭৩ এর ব্যাচে পড়েছিলে? হ্যাঁ, জবাব দিল।
তুমি কি ইন্টারমিডিয়েটে থার্ড ডিভিশনে পাশ করেছিল? হ্যাঁ। তুমি কি খুলনা সোনালী ব্যাংকে কেরানির চাকুরী করতে? হ্যাঁ। ব্যস্! আর না। হ্যাং আপ করলাম ওর মুখের উপর।
সেদিন বুঝেছিলাম আমলা হলে কেউ কেউ এমনি ইতর হয়ে যায়! আর কখনো কোনো বন্ধু বা সহপাঠী আমলার সংগে কথা বলিনি। তবে, মোহাম্মদ আব্দুল মজিদ সাবেক চেয়ারম্যান, NRB আমার অনন্য সাধারণ বন্ধু। মজিদের সংগে আমার সম্পর্ক আজো বন্ধুর। Mazid is a one hundred percent honest and efficient bureaucrat.