Home ফিচার বাঙ্গালী সেনা ছাড়া অসহযোগে নেমেছিল সারাবাংলা
জাফর ওয়াজেদ: ১৯৭৫এর ১৫আগস্ট সকালেই পাকিস্তানিমনা খুনি মুশতাকের প্রতি সংবিধান বহির্ভূতভাবে যে বীরেরা আনুগত্য প্রকাশ করেন–তাঁরা বঙ্গবন্ধুর লাশ সিড়িতেঁ রেখে জুনিয়রদের নির্দেশ মেনেছেন।তাঁরা বীরের তকমা রাখলেন কি ফেলে দিলেন তা বিবেচ্য নয়। তাঁরা জাতির পিতার হত্যাকে সমর্থন করেছেন। অথচ শেখ মুজিবের নামেই তাঁরা রণাঙ্গনে লড়াইয়ে নেতৃত্ব দিযেছেন।
যে সৈনিকেরা পাকিদের ক্যান্টনমেন্টে ৩মার্চ হতে পাকিস্তান রক্ষায নিমগ্ন ছিলেন-তারা ছাড়া পুলিশ, ইপিআর, আনসার, প্রাক্তন সেনারা সবাই মুজিবের ডাকে সাড়া দিয়ে সশস্ত্র প্রশিক্ষণ শুরু করেন। তাই ২৫মার্চ পূর্ব-পরবর্তী সময়ে শুধু ওই বাঙ্গালী সৈনিকরা পাকি ক্যান্টে–অনেকে পাাকিদের আক্রমণের শিকার হয়ে পালায়-কেউ পাকিস্তানিদের উপর পাল্টা হামলা চালায়–কেউ কেউ আনুগত্য প্রকাশ করে।
২৫মার্চ হতে গণপ্রতিরোধ গড়ে ওঠে। অসহায়-নিরুপায় বাঙ্গালী সৈনিকরা উপায়ান্তর হয়ে প্রতিরোধে এগিয়ে আসে–যুদ্ধে যোগ দেয়। তারা সবাই যে পাকিস্হান ভেঙ্গে যাক চেযেছিলেন তা নয়।তাদের জন্যই জিয়ার ঘোষণা পাঠ দরকার ছিল। বাকী দেশবাসী ২৬মার্চই জেনে গেছে মুজিবের স্বাধীনতার ঘোষণা–বিবিসি ও আকাশবাণীর কল্যাণে। সেদিনের পাকি ক্যান্টে থাকারা শেখ মুজিবের স্বাধীনতার ঘোষণা শ্রবণ না করার কথা।
কারণ তাদের কেউ হামলায় নিহত-কেউ পালিযে জান বাঁচানো-কেউ পাকিদের হয়ে বাঙ্গালী নিধনে-কেউ ছুটিতে থাকায় সরাসরি যুদ্ধে নামে। শেখ মুজিবের ঘোষণা যারা শুনতে পান নি–যারা খুনিদের প্রতি অনুগত হয়–তাদের নানা সমস্যা মষ্তিষ্কে ভর করে। শেষ বয়সে বিভ্রম বাড়ে আরো।
তোষামদকারি সম্পর্কে এইচ টি ইমামের একটি বক্তব্য ছিলো এমন: “এ দেশ হলো চাটুকারদের চারণ ক্ষেত্র। এই চাটুকারদের নিজেদের সম্পর্কে কোনো ভালো বক্তব্য থাকে না। এদের কাজ হলো প্রথমে মনিবের মনের ভাব কৌশলে জেনে নেওয়া।। অতঃপর মনিবের পছন্দমতো বক্তব্য দিতে থাকা। আর মনিব যাকে পছন্দ করেন না বা যার সম্বন্ধে কটুকথা বললে মনিব মনে মনে খুশি হবেন, ঐরকম বক্তব্য দেওয়া। মনিব বা তার নেতা -নেত্রীর স্তুতি গাইতে গাইতে এরা দেবতার পর্যায়ে নিয়ে যায়। একপর্যায়ে একজন সত্য-মত্যই দেবতা , আরেকজন দানব বনে যান।
আমাদের দেশে তোষামদের কোনো সীমা নেই। এই তোষামদকারিরা সবসময় ক্ষমতার আশেপাশে থাকে অথবা যেতে আগ্রহী। ক্ষমতাধরদের তুষ্টিসাধন করে নিজের স্বার্থ হাসিল করাই এদের প্রধান লক্ষ্য। পরিণামে যাঁর তোষামদ তারা করছে তাদেঁরই চরম সর্বনাশ করছে। ১৯৭২সাল থেকে আজ পর্যন্ত একই ধারা অব্যাহত রয়েছে।”
সুত্র: বাংলাদেশ সরকার, ১৯৭১।