সালাহ উদ্দিন: ১৯৭১ সালের এই দিনে পক্ষ ত্যাগী ৫ বাঙালী কূটনীতিক কে বরখাস্ত করে পাকিস্তান সরকার। এরা হলেন আবুল মাল আব্দুল মুহিত (সিএসপি) ইকনমিক কাউন্সিলর যুক্তরাষ্ট্র , মহিউদ্দিন আহম্মদ (সিএসএস) ট্রেড কমিশনার হংকং, রফিকুল ইসলাম চৌধুরী (পিএসপি) ১ম সচিব ডেপুটি হাই কমিশন কলকাতা, ফজলুল হক লেবার এটাচে ব্রিটেন , কাজী নজরুল ইসলাম (সিএসএস) ৩য় সচিব ডেপুটি হাই কমিশন কলকাতা।
এদিন, মালিক মন্ত্রি সভায় তখনও যোগ দেন নাই পিডিপি। দল থেকে তখনও সিদ্ধান্ত ও নমিনেশন না দেয়ায় তাদের অন্তর্ভুক্তি বিলম্ব হয়। মন্ত্রীর তালিকায় যাদের নাম শোনা যাচ্ছিল, তারা হলেন চট্টগ্রামের মাহমুদুন নবী চৌধুরী, সিলেটের জসিম উদ্দিন ও মোঃ জিলানি, ময়মনসিংহ এর আফতাব উদ্দিন আহমেদ, একে মোশাররফ হোসেন, ফরিদপুরের শামশুর রহমান, খুলনার রফিকুল ইসলাম, শফিকুর রহমান, আব্দুল জলিল। তবে নুরুল আমিনের তালিকায় জসীম, মোশাররফ, নবী, শফিকুর রহমানেরও নাম শোনা যাচ্ছিল।
মন্ত্রী সভায় কাইউম মুসলিম লীগের প্রতিনিধি দেয়ার লবিং চালাচ্ছেন সাবেক মন্ত্রি কাজি কাদের। কনভেনশন মুসলিম লীগের বহিষ্কৃত নেতা শামশুল হুদা কাইউম লীগের কোটায় মন্ত্রী হওয়ার চেষ্টায় আছেন তিনি।
একই দিনে পূর্ব পাকিস্তান কাইউম মুসলিম লীগের সভাপতি খান আব্দুস সবুর একটি যুব সমাবেশে বক্তৃতা করেন। এসময় তিনি বলেন, প্রদেশের তরুনদের দেশের জন্য নিবেদিত হতে হবে। ভারতীয় দুশমনরা এই প্রদেশের তরুন সমা কে বিষাক্ত করে তুলছে। তরুন সমাজের উচিত পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার আদর্শ ও নীতিকে ধারন করে শয়তানের বলয় থেকে বের করে আনা। তিনি দেশের সার্বভৌমত্ব এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে রক্ষার জন্য তরুন সমাজের প্রতি আহবান জানান মুসলিম লীগের সভাপতি খান আব্দুস সবুর।
এদিকে, হাঁপানি ও ব্রঙ্কাইটিস রোগে আক্রান্ত হইয়া পিজি হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর কয়েকদিন যেতে না যেতেই শেখ মুজিবের পিতাকে পি জি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তিনি চক্ষু, গ্যাস্ট্রিক, আলসার ও রক্তশূন্যতা রোগে ভুগিতেছিলেন।
অন্যদিকে, মুক্তিযোদ্ধাদের পেতে রাখা টাইম বোমায় প্রাদেশিক মৌলিক গণতত্র ও স্বায়ত্তশাসন ( স্থানীয় সরকার ) মন্ত্রী ও নেজামে ইসলামী নেতা মওলানা মোহাম্মদ ইসহাক আহত হন। তিনি ডান পা ও ডান হাতে আঘাত পান তবে গুরুতর নয়। লালবাগে এক সভা শেষে সচিবালয়ে যাওয়ার পথে ঢাকা মেডিক্যালের সামনে পৌঁছালে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ বলেছে ড্রাইভারের আসনের নীচে বোমা পাতা হয়েছিল। গাড়িতে থাকা তার দেহরক্ষী এবং এক ছাত্র নেতা অক্ষত ছিলেন।
এদিন, জামায়াতে ইসলামী থেকে মনোনীত দুইজন মন্ত্রী আব্বাস আলী খান এবং একেএম ইউসুফের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে জামাত প্রাদেশিক সভাপতি গোলাম আজম বলেন মুসলিম জাতীয়তাবাদকে বাদ দিয়ে তিনি বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদ মানতে রাজি নন। জামায়াতের কর্মীরা পাকিস্তান অখণ্ড রাখার সংগ্রামে নিজেদের আত্মাহুতি দিচ্ছে। এপর্যন্ত দেশের জন্য যত শহীদ হয়েছে তার প্রায় সবাই জামায়াত কর্মী। আইন সম্মতভাবে গঠিত নয় এমন মন্ত্রি সভায় যোগদানের তিনি ব্যাখ্যা প্রদান করেন।