সেঞ্চুরি দিয়ে নিজের অভিষেক টেস্টটা রাঙালেন ভারতের যুব বিশ্বকাপ জয়ী অধিনায়ক পৃথ্বি শ। বৃহস্পতিবার রাজকোটে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৯৯ বলে শত রান স্পর্শ করেন মহারাষ্ট্রের এই কিশোর। আউট হয়েছেন ১৩৪ রান করে। ভারতীয় কিংবদন্তি ব্যাটসম্যান শচীন টেন্ডুলকার যাকে অনেক আগেই চিহ্নিত করেছিলেন ‘বিস্ময়-বালক’ হিসেবে।
স্কুল পর্যায় থেকে অসম্ভব ধারাবাহিক এই ক্রিকেটার। ২০১৩ সালে মাত্র ১৪ বছর বয়সে নিজের কীর্তির জন্য আলোচনায় উঠে এসেছিলেন। ওই বছর স্কুল ক্রিকেটে ৫৪৬ রানের অবিশ্বাস্য এক ইনিংস খেলেছিলেন পৃথ্বী। যা ওই পর্যায়ের ক্রিকেটে কোনও ভারতীয়র সর্বোচ্চ রান।
প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটেও অভিষেক ম্যাচে সেঞ্চুরি করেন তিনি। ২০১৭ সালে রঞ্জি ট্রফির সেমি ফাইনালে তামিলনাড়ুর বিপক্ষে সেঞ্চুরি করে মুম্বাইকে জেতান তিনি। এরপর দলীপ ট্রফিতেও অভিষেকে সেঞ্চুরি করেন। যার মধ্য দিয়ে তিনি স্পর্শ করেন কিংবদন্তি শচীনকে। শচীনও রঞ্জি ও দলীপ ট্রফির অভিষেকে সেঞ্চুরি করেছিলেন। তবে এবার টেস্ট অভিষেকে ছাড়িয়ে গেলেন শচীনকেও। ক্রিকেটের এই দীর্ঘ সংস্করণেও পার রাখলেন তিনি সেঞ্চুরি দিয়েই।
তবে পৃথ্বির এই উত্থান খুব একটা সহজ ছিল না। শৈশবেই হারিয়েছিলেন মাকে। বাবা পঙ্কজ সাউই বড় করেছেন তাকে। অনুশীলনের জন্য একসময় প্রতিদিন ভোর সাড়ে চারটায় ঘুম থেকে উঠতে হত। তারপর দেড় ঘণ্টার পথ পাড়ি দিয়ে ৬টার মধ্যে ধরতে হতো ট্রেন। ট্রেনে বান্দ্রার এমআইজি মাঠে স্কুলের ব্যাগ ও ক্রিকেট ব্যাগ নিয়ে অনুশীলনে পৌঁছাতেন পৃথ্বী।
২০১০ সালে ১১ বছর বয়সে ভারতের সাবেক স্পিনার নীলেশ কুলকার্নির চোখে পড়েন পৃথ্বী। তারপরই অনুশীলনের জন্য কষ্ট কমে যায় তার। নীলেশের স্পোর্টস ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি পৃথ্বিকে বার্ষিক তিন লক্ষ টাকার স্টাইপেন্ড দিতে শুরু করে। পরে সান্তাক্রুজে ফ্ল্যাটও পান একটি।
চলতি বছর সবচেয়ে কম বয়সী ভারতীয় অধিনায়ক হিসেবে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে দলকে নেতৃত্ব দেন তিনি। বিশ্বকাপের পাঁচ ইনিংসে ৬৫.২৫ গড়ে ২৬১ রান করেন। এই প্রতিযোগিতায় ভারতীয় অধিনায়ক হিসেবে যা সর্বাধিক রান। এই বছরই আইপিএলে অভিষেক হয় তার। খেলেছেন দিল্লি ডেয়ার ডেভিলসের হয়ে। এই প্রতিযোগিতায়ও সবচেয়ে কম বয়সী ক্রিকেটার হিসেবে নাম লেখা তিনি।