চীনের কাছ থেকে অনেক কিছু শেখার আছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সকলের সঙ্গে বিশেষ করে প্রতিবেশীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখেই বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, গত ৭০ বছরে চীন নিজেকে বিশ্বের দ্বিতীয় অর্থনৈতিক শক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। চীনের কাছ থেকে অনেক কিছুই শেখার আছে। বাংলাদেশের শিক্ষার্থী যারা চীনে লেখাপড়া করছে তাদেরকে আমি বলব- এই দেশটির কাছ থেকে তারা অনেক কিছুই শিখতে পারে, কী করে চীনের জনগণ দিনরাত এত পরিশ্রম করে।
বুধবার সন্ধ্যায় বেইজিংয়ের লিজেনডেল হোটেলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সম্মানে আয়োজিত এক নাগরিক সংবর্ধনায় একথা বলেন তিনি। বেইজিংয়ে বাংলাদেশ দূতাবাসের তত্ত্বাবধানে চীন প্রবাসী বাংলাদেশিরা এ সংবর্ধনার আয়োজন করে।
ধানমন্ত্রী ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের (ডব্লিউইএফ) অ্যানুয়াল মিটিংয়ে যোগ দিতে সরকারি সফরে চীনে অবস্থান করছেন। ৫ দিনের এ সফরে চীনের শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে তার বৈঠকের কথা রয়েছে।
পরারাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন ও প্রবাসী বাংলাদেশিদের পক্ষে ইঞ্জিনিয়ার শামসুল হক অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। চীনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ফজলুল করিম অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সবার সঙ্গে বিশেষ করে প্রতিবেশীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে।তার সরকার কেবল দেশের অভ্যন্তরীণ উন্নয়নই করছে না, উপরন্তু দেশের পররাষ্ট্র নীতি— সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়— এর আলোকে বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিকভাবেও সামনে এগিয়ে নিচ্ছে।
চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের বিষয়ে শেখ হাসিনা বলেন, চীনের সহযোগিতায় কর্ণফুলী টানেলসহ বিভিন্ন মেগা প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। আর চীনের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় থাকার করণেই তা সম্ভব হচ্ছে।
ভারতের সঙ্গে সীমান্তসমস্যা সমাধান এবং মিয়ানমার ও ভারতের সঙ্গে সমুদ্রসীমা সমস্যার সমাধান সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী স্মরণ করেন, বঙ্গবন্ধু বিভিন্ন আইন প্রণয়নের মাধ্যমে প্রতিবেশীদের সঙ্গে অমীমাংসিত সমস্যাসমূহ সমাধানের উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলেন।
তিনি বলেন, ‘এটা দেখা গেছে যে বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় ছিটমহল বিনিময়কালে যুদ্ধ বেঁধে যায় কিন্তু ভারতের জনগণ বাংলাদেশের বিষয়ে একতাবদ্ধ ছিল। কেননা ভারতীয় সংসদে দলমত নির্বিশেষে সকলের সম্মতিক্রমে সীমান্ত আইনটি অনুমোদিত হয়।’
প্রধানমন্ত্রী তার সরকারের সময়ে দেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি, দারিদ্র্যের হার কমানোসহ নানা উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরেন। বলেন, ‘জাতি ২০২০ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবার্ষিকী এবং ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করবে। আর সে সময়ে আমরা এমন এক বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চাই যেখানে কোন ক্ষুধা ও দারিদ্র্য থাকবে না।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ আজ তার চমকপ্রদ উন্নয়নের জন্য সারাবিশ্বে প্রশংসিত হচ্ছে। আমাদের এই সাফল্যকে ধরে রাখতে হবে। আমাদের আরও কাজ করে, আরও শ্রম দিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে হবে।