আগে জীবন পরে জীবিকা: প্রধান বিচারপতি

0
107

প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বলেছেন, ‘মানুষ যেভাবে করোনায় আক্রান্ত হচ্ছে এ অবস্থায় সব কোর্ট খুলে দিতে পারি না। আমাদের মনে রাখতে হবে আগে জীবন পরে জীবিকা।’ আজ রোববার (১৮ এপ্রিল) সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির (বার অ্যাসোসিয়েশন) সম্পাদক ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল ভার্চুয়ালি হাইকোর্টে আরও কিছু বেঞ্চ চালু করার আহ্বান জানালে প্রধান বিচারপতি এসব কথা বলেন।

আদালতে ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল প্রধান বিচারপতিকে বলেন, ‘মাই লর্ড, বর্তমানে চারটি ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ পরিচালিত হচ্ছে। তার মধ্যে আজ আছে কেবল দুটি বেঞ্চ। রমজান চলছে, সামনে ঈদ। এই অবস্থায় আরও কিছু ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ বাড়ালে আইনজীবীরা উপকৃত হতো। আপিল বিভাগ ও চেম্বার জজ আদালত মিলে সপ্তাহে পাঁচদিনই সর্বোচ্চ আদালত চলছে। তাই আরও কয়েকটি হাইকোর্ট বেঞ্চ চালু করা যেতে পারে।’

ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজলকে উদ্দেশ্য করে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘শোনেন, আমরাও বারের (আইনজীবী সমিতি) থেকে এসেছি। আমরাও আইনজীবীদের সমস্যাগুলো বুঝি। জীবন ও জীবিকা দুটিই গুরুত্বপূর্ণ। তবে এক্ষেত্রে আগে জীবন, পরে জীবিকা।’

একপর্যায়ে আইনজীবী সমিতির সাবেক সহ-সভাপতি মো. অজি উল্লাহও হাইকোর্টে জামিন ও রিট মোশনের বেঞ্চ বাড়ানোর জন্য আবেদন জানান।

তখন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘আগে জীবন না জীবিকা? আমার তো মনে হয় আগে জীবন, পরে জীবিকা। করোনায় মানুষ যেভাবে আক্রান্ত হচ্ছে এ অবস্থায় তো আমরা সব কোর্ট খুলে দিতে পারি না। আমরা যদি এ অবস্থায় হাইকোর্টে ভার্চুয়াল বেঞ্চের সংখ্যা বাড়াতে যাই তাহলে অনেক স্টাফকে সশরীরে কোর্টে আসতে হবে। এতে জনবল বেড়ে যাবে এবং করোনা আক্রান্তের ঝুঁকিও বাড়বে।’

তিনি বলেন, ‘আমি কোনো সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে আপিল বিভাগের সব বিচারপতির সঙ্গে বসে সিদ্ধান্ত নিই। বিচারক, আইনজীবী, বিচারপ্রার্থী সবার কথা চিন্তা করে বেঞ্চ সংখ্যা কমিয়ে দিয়েছি। করোনা পরিস্থিতি বিবেচনা করে আমরা হাইকোর্টে ভার্চুয়াল বেঞ্চ বাড়ানোর বিষয়টি দেখব।’

প্রধান বিচারপতি আরও বলেন, ‘সংক্রমণের ঝুঁকি বিবেচনায় এখন মাত্র মাত্র ৪০ জন স্টাফ নিয়ে আপিল বিভাগ চলছে। হাইকোর্টের চারটি ভার্চুয়াল বেঞ্চেই অনেক স্টাফ লাগছে। এই অবস্থায় আবার ১০টা হাইকোর্ট বেঞ্চ চালাতে গেলে হাজার স্টাফ লাগবে। তখন তাদের সংক্রমণ ঝুঁকি তৈরি হবে। আমরা সব বিষয় বিবেচনায় নিয়েই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

এছাড়া এদিন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বলেন, বিচার বিভাগ পৃথককরণ হয়েছে ২০০৭ সালে, আজকে ২০২১। চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট ভবনের জন্য সব জায়গা এখনো অধিগ্রহণ হয়নি, তারপরে বিল্ডিং করতে হবে। আমি আর কত বলব ?

প্রধান বিচারপতি বলেন, আমাদের জুডিশিয়াল অফিসার (বিচারিক কর্মকর্তা) দরকার দ্বিগুণ ও তিন গুন। আইনজীবীরা যদি ভার্চুয়াল কোর্ট করেন, তাহলে একমাত্র উত্তরণের পথ আছে। তা না হলে ত্রিশ লাখ মামলা কোনো দিন শেষ হবে না।

উল্লেখ্য, করোনার সংক্রমণরোধে লকডাউনের মধ্যে হাইকোর্টের চারটি বেঞ্চে বিচারকাজ চলছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here