ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) বেস্ট রিপোর্টিং অ্যাওয়ার্ড-২০২৫ পেয়েছেন ঢাকা পোস্টের ‘চিফ অব ক্রাইম অ্যান্ড আরবান অ্যাফেয়ার্স’ জসীম উদ্দীন। অবহেলা-নিরাপত্তার অজুহাত/ হতাশা-নির্যাতন-বঞ্চনায় বিঘ্নিত রোহিঙ্গা শিশুর ‘মানসিক স্বাস্থ্য’ শিরোনামের প্রতিবেদনের জন্য ‘নারী, শিশু ও মানবাধিকার’ বিষয়ে এ পুরস্কার পান তিনি।
রোববার (১৬ নভেম্বর) সকালে রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত এক জমকালো অনুষ্ঠানে ‘নগদ-ডিআরইউ-বেস্ট রিপোর্টিং অ্যাওয়ার্ড’ জসীম উদ্দীনের হাতে তুলে দেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নগদের চেয়ারম্যান কায়জার আহমেদ চৌধুরী, নগদে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক নিযুক্ত প্রশাসক মোতাছিম বিল্লাহ, ডিআরইউর সভাপতি আবু সালেহ আকন ও সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেলসহ কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যরা।
এ বছর মোট ২৭টি বিষয়ে সেরা রিপোর্টিং পুরস্কার দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে ভিন্ন ভিন্ন ক্যাটাগরিতে বিজয়ী সাংবাদিকদের নাম ঘোষণা করা হয়। পুরস্কারপ্রাপ্ত সাংবাদিকদের হাতে তুলে দেওয়া হয় সম্মাননা ক্রেস্ট, সনদ ও নগদ ৫০ হাজার টাকা।
উল্লেখ্য, এর আগে গত বছর ক্র্যাব বেস্ট রিপোর্টিং অ্যাওয়ার্ড-২০২৪ অর্জন করেন জসীম উদ্দীন। মাদক বিষয়ে অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের জন্য এ পুরস্কার পান তিনি।
রাজধানীর মোহাম্মদপুরের জেনেভা ক্যাম্পে মাদক কারবার নিয়ে ‘১৭ একর জমিতে ১১ গ্যাং, মাদক কারবারি দেড় হাজার’, ‘থানা লুটের অস্ত্রে নিয়ন্ত্রণ মাদকের কারবার!’ ও ‘পরিস্থিতি খারাপ হতে পারে’ প্রতিবেদন পেয়েও ব্যবস্থা নেয়নি পুলিশ’ শীর্ষক তিন পর্বের সিরিজ প্রতিবেদন করেন তিনি। এই প্রতিবেদনগুলো পুরস্কারের জন্য বিবেচিত হয়।
২০২১ সালেও ক্র্যাব কর্তৃক ঘোষিত বর্ষসেরা অপরাধ বিষয়ক সাংবাদিকের পুরস্কার পান জসীম উদ্দিন। একই বছর শিশু অধিকার নিয়ে কাজের স্বীকৃতি হিসেবে ইউনিসেফের ১৬তম মীনা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ডও অর্জন করেন তিনি। ‘শিশুদের অধিকার রক্ষার’ বিশেষ ক্যাটাগরিতে পুরস্কার পায় তার বাল্য বিবাহ সংক্রান্ত ‘নিরাপত্তা অজুহাত, আইনের ফাঁক বাড়াচ্ছে বাল্যবিয়ে!’ শিরোনামের প্রতিবেদন।
২০২৩ সালে দ্বিতীয় বারের মতো ইউনিসেফের ‘মীনা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড (২০২৩)’ অর্জন করেন জসীম উদ্দিন। রোহিঙ্গা শিবিরে কন্যাশিশুদের স্বাস্থ্যগত নিরাপত্তা নিয়ে প্রতিবেদনের জন্য এবার পুরস্কার পান তিনি।
এছাড়া তিনি ২০২২ সালে সিপিডির বেস্ট রিপোর্টিং অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেন। ঢাকা পোস্টে প্রকাশিত তার শিশুর অধিকার ও শিশু বাজেট নিয়ে প্রতিবেদন ‘উপেক্ষিত শিশুরা : প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও বাজেটে নেই প্রতিফলন’ শ্রেষ্ঠ প্রতিবেদন হিসেবে মনোনীত হয়।
বর্তমানে ঢাকা পোস্টের চিফ অব ক্রাইম অ্যান্ড আরবান অ্যাফেয়ার্স জসীম উদ্দীনের বাড়ি গাইবান্ধায়। গাইবান্ধা সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এসএসসি ও এইচএসসি পাসের পর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শেষ করেন তিনি।
২০০৭ সালে বিশ্ববিদ্যালয় অঙ্গনে সাংবাদিকতায় হাতেখড়ি হয় তার। গাইবান্ধার স্থানীয় দৈনিক ঘাঘট, জাতীয় দৈনিক মানবজমিন ও আমাদের কণ্ঠ পত্রিকার রাবি প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করেন তিনি। পাশাপাশি তিনি বাংলাদেশ বেতার রাজশাহীতে অনুলিপিকার পদেও কাজ করেন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির (রাবিসাস) সাংগঠনিক সম্পাদক ও সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন জসীম উদ্দীন।
ঢাকায় দৈনিক মানবজমিন, টাইমনিউজবিডি, জাগোনিউজের নিজস্ব প্রতিবেদক হিসেবে কাজ করেন। ২০২০ সালের ডিসেম্বর থেকে তিনি ঢাকা পোস্টের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক হিসেবে কাজ করছেন। এ বছর তিনি ‘চিফ অব ক্রাইম অ্যান্ড আরবান অ্যাফেয়ার্স’ হিসেবে পদোন্নতি পান।
পেশাদার সাংবাদিক হিসেবে জসীম উদ্দীন ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ), ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে), বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ক্র্যাব), রংপুর বিভাগ সাংবাদিক সমিতি (আরডিজে), রংপুর বিভাগ রিপোর্টার্স ফোরাম (আরডিআরএফ), মেরিন জার্নালিস্ট নেটওয়ার্কসহ বিভিন্ন সংগঠনে যুক্ত রয়েছেন।
তিনি অপরাধ, মানব পাচার, মানবাধিকার, নারী ও শিশু, পরিবেশ দূষণ ও পর্যটন নিয়ে সংবাদ ও ফিচার প্রতিবেদন তৈরি করেন।








