শিহাব শাহীন: প্রিয় প্রধানমন্ত্রী, ‘রাষ্ট্রব্যবস্থায় ভাইরাস! সেই ভাইরাসের দ্রুত বিস্তৃতি আপনাকে ‘আত্মঘাতী অহংকারী’ হতে বাধ্য করে তুলছে।
অহংকার খারাপ না।আমাদের অহংকার করার মত অনেক কিছু আছে। যেমন, আমাদের মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা, বিজয়, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি আমাদের স্বাধীনতার স্থপতি, জাতীয় চার নেতা, আমাদের কৃষক, খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্নতা, গার্মেন্টস শিল্পে আমাদের শ্রমিকরা বিশেষভাবে নারীর ব্যাপক উপস্থিতি, জাতিসংঘের শান্তি মিশনে আমাদের সশস্ত্রবাহিনী, আমাদের সাহিত্য, সংস্কৃতি, স্বাস্থ্য খাতের সাফল্য, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য সোস্যাল সেফটি নেট কর্মসূচী, নিজস্ব অর্থায়নে নির্মানাধীন পদ্ম সেতু, সপরিবারে বংগবন্ধু হত্যার বিচার, ৭১’এর মানবতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এবং সেই সাথে আপনি নিজে, দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে সফল সরকার প্রধান। তাই নিজেদের অর্জনগুলিকে নিয়ে নিশ্চয়ই আমাদের অহংকার থাকবে।
কিন্তু ভাইরাসের নীরব আক্রমনে আক্রান্ত হয়ে, অহংকার যদি ‘আত্মঘাতী অহংকার’এ রূপ নেয়, তাহলে, ঘরপোড়া গরু যেমন সিঁদুরে মেঘ দেখলে ভয় পায়, আমরা সাধারনরাও তেমনই অজানা আশংকায় ভীত হয়ে পড়ি। খেলায় যেমন আত্মঘাতী গোল খেয়ে প্রতিপক্ষকে এগিয়ে দিয়ে, নিজেরা পিছিয়ে পড়লে যে ক্ষতি হয়, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তা পুষিয়ে নেয়া সাধ্যাতীত হয়ে পড়ে পড়ে। তাই, আত্মঘাতী গোলের সুযোগ নিয়ে প্রতিপক্ষ আবির্ভুত হউক, আর আপনি হেরে যান তা আমরা চাই না।
একথা ঠিক, অনেক সীমাবদ্ধতার মাঝেও, আপনার ব্যক্তিত্বের ক্যারিশ্মা ও গতিশীল নেতৃত্বে আওয়ামীলীগ সরকারই এখন পর্জন্ত স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের প্রধান শক্তি এবং সক্ষম ও সফল সরকার। এমনকি আপনিবিহীন, ভবিষ্যৎ এর কোন আওয়ামীলীগ সরকারও স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে এমন শক্তিশালী ও বলিষ্ঠ প্রতিনিধিত্ব করতে পারবে কিনা, তা নিয়ে যথেষ্ট সংশয় আছে!
তাই, আপনি হেরে যান, তা আমরা চাই না। আপনার হেরে যাওয়া, শুধু আপনার বা আওয়ামীলীগের হেরে যাওয়া নয়। আমাদের সবার হেরে যাওয়া । মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির পরাজয়। আপনি পরাজিত হলে, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির কোন অস্তিত্বই থাকবে না, বলেই আশংকা!
তাই, আপনাকে বিজয়ীর অবস্থানেই থাকতে হবে। সে কারণেই, সরকার ও দল থেকে আত্মঘাতী অহংকারের ভাইরাস নির্মুল করার জন্য অবিলম্বে এন্টিভাইরাস, ফোর্থ জেনারেশন এন্টিবায়োটিক কোর্স শুরু করতে, আপনার বিবেচনার জন্য প্রস্তাব রেখে গেলাম।